বাউড়ি
বাউড়ি
আদিবাসী কথাটি শুনলেই কেমন যেন মনে হয় , ঝাঁকড়া ঝাঁকড়া চুল আর হাতে তীর ধনুক নেওয়া একদল মানুষের ছবি চোখের সামনে ভেসে ওঠে , তাই না ? বাস্তব কিন্তু মোটেও তা নয় । ভারতে আর্য অনুপ্রবেশের সময় থেকে এরকম কিছু কথা সমাজে প্রচলিত করে দেওয়া হয় যার মাধ্যমে আমাদের মনে আদিবাসী সম্বন্ধে এমন বিরূপ প্রতিক্রিয়া গড়ে উঠতে থাকে ।
আদিবাসী জনগণকে প্রাথমিক দিকে প্রথম জাতি, পাহাড়ি জনগোষ্ঠী, আদিম মানুষ, উপজাতি প্রভৃতি নামে চিহ্নিত করা হত। তবে এ নিয়ে সারা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মতবাদ প্রচলিত আছে । তাদের সবকটিকে একত্রে করলে সারসংক্ষেপ এই দাঁড়ায় যে , কোন একটি অঞ্চল অনুপ্রবেশের ফলে দখল হওয়ার আগে সেই অঞ্চলের বাসিন্দাদের আদিবাসী বলা হয় ।
পাঁচটি মহাদেশে বসবাসকারী ৫,০০০ আদিবাসী গোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ কোটি। ভারতে প্রায় চার কোটি হেক্টর বনভূমিতে বসবাস করে প্রায় ১০ কোটি আদিবাসী ও অন্যান্য জনজাতি । যুগে যুগে এরা সমাজে নানাভাবে উপেক্ষিত , লাঞ্ছিত ও বঞ্চনার শিকার হয়েছে এবং যখন এসব অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে নিজেদের অধিকারের স্বপক্ষে তারা কথা বলেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তারা দমন নির্যাতন ও হত্যার শিকার হয়েছে। জাতিসংঘের আলোচনায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীর এ বিষয়টি বেশ গুরুত্বের সাথে নেওয়া হয়েছে এবং অবশেষে জাতিসংঘ ১৯৮২ সালে সর্বপ্রথম আদিবাসীদের স্বীকৃতি দেয়।
ভারতে এদের উচ্ছেদ করার পেছনে মূল কারণ হলো, খনি ও কলকারখানা নির্মাণ । অন্যায় ভাবে সরকার আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিয়ে তুলে দিয়েছে শিল্পপতিদের হাতে । সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশে স্পষ্ট জানানো হয়েছে , অন্তত ১৭টি রাজ্য থেকে ১০ লাখেরও বেশি বনবাসী উপজাতি ও অন্যান্য জনজাতি পরিবারগুলিকে উচ্ছেদ করা হোক । ফলে এদেশে আদিবাসীদের সমস্যা আরও বেড়েছে ।
২০০৬ সালের বনভূমি অধিকার রক্ষা আইনে বলা হয়েছে, যে-সব উপজাতি পরিবার বংশপরম্পরায় অরণ্যভূমিতে বসবাস করছে, চাষাবাদ করছে এবং সেখান থেকেই তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করছে সেখানে তাঁদের থাকার অধিকার আছে৷ আইন প্রণয়নের দিন পর্যন্ত বনবাসীরা যে যেখানে বাস করছেন, তিনি বা তাঁরা জমির মালিক বলে গণ্য হবেন ৷ কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকার নানা অজুহাতে জমির মালিকানাপত্র, যাকে পাট্টা বলে, তা দিতে গড়িমসি করে ৷ ফলে নিরক্ষর বনবাসী পরিবারগুলির পক্ষে ঐ সংক্রান্ত নথিপত্র জোগাড় করা সম্ভব না হওয়ায় তাঁদের জমির মালিকানাসত্ত্ব খারিজ হয়ে যায় ।
এই রকমভাবে আদিবাসীদের বনভূমি আবাস কেড়ে নিয়ে খনি হয়েছে, বাঁধ হয়েছে, কারখানা হয়েছে৷ তাঁরা পেয়েছে শুধু অবিচার আর বঞ্চনা ।
আদিবাসীদের পুরোনো ইতিহাস পর্যালোচনা করলে স্পষ্ট দেখা যায় যে ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতিতে আদিবাসীদের এক বিরাট অবদান রয়েছে যেগুলির অধিকাংশ ইতিহাসে স্থান পাইনি অথবা হারিয়ে গেছে । যুগের সাথে সাথে তারাও হয়েছে বঞ্চিত এবং অস্পৃশ্য । এমন এক শ্রেণীর নাম বাউড়ি , যার সম্বন্ধে জানাবো আরও আগামীতে ।
বাউড়ি
বাউড়ি একপ্রকার হিন্দু তফসিলি জাতিবিশেষ। ভারতীয় বর্ণব্যবস্থায় এরা নিম্নবর্গীয়। পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের বাঁকুড়া, বীরভূম ও অন্যান্য জেলায় বাউড়িরা প্রচুর সংখ্যায় বাস করেন।
২০০১ সালের জনগণনা অনুযায়ী বাউড়িদের সংখ্যা ১,০৯১,০২২। এঁরা পশ্চিমবঙ্গের তফসিলি জাতি জনসংখ্যার মোট ৫.৯ শতাংশ। বাউড়িদের মধ্যে মাত্র ৩৭.৫ শতাংশ সাক্ষর – এর মধ্যে পুরুষ সাক্ষরতার হার ৫১.৮ শতাংশ এবং নারী সাক্ষরতার হার ২২.৭ শতাংশ। মাত্র ৪.৭ শতাংশ বাউড়ি মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছে অথবা বিদ্যালয় শিক্ষা সমাপ্ত করেছে ।
বাউড়িরা নিম্নলিখিত উপবর্ণগুলিতে বিভক্ত: মল্লভূমিয়া, শিখরিয়া বা গোবারিয়া, পঞ্চকোটী, মোলা বা মুলো, ঢালিয়া বা ঢুলো, মালুয়া, ঝাটিয়া বা ঝেটিয়া ও পাথুরিয়া।
বাউড়িদের কয়েকটি উপবর্ণ নির্দিষ্ট অঞ্চলের সীমার মধ্যে বসবাস করতেন। মল্লভূমিয়া, মালুয়া ও সম্ভবত মোলারা মল্লভূমের (প্রাচীন মধ্য ও দক্ষিণ বাঁকুড়া) বাসিন্দা ছিলেন। শিখরিয়ারা সম্ভবত বাস করতেন শিখরভূম অর্থাৎ কাঁসাই ও বরাকর নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে। ঢুলিয়ারা বাস করতেন ঢলভূম অর্থাৎ বর্তমান খাতড়া মহকুমা অঞ্চলে। পঞ্চকোটীরা ছিলেন পুরুলিয়া জেলার পঞ্চকোট এস্টেটের বাসিন্দা।
বাউড়িরা সমাজে চিরকাল ব্রাত্য থেকে গেছে । সমাজে উচ্চবর্ণের লোকেরা সমাজ অধিগ্রহণ করলে , এদের সমস্যা আরও বৃদ্ধি পায় । ভারতে কলোনি অধ্যায় শুরু হলে সমাজে উচ্চ বর্ণের দপদপা ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করে । তাদের ছোঁয়া সমাজের চোখে অপরাধ বলে গণ্য হয় , এমনকি নিম্ন বর্ণের ছায়া মারানো পাপ বলে গণ্য হতে থাকে । মন্দিরে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয় । এভাবেই ধীরে ধীরে সমাজের মূল স্রোত থেকে তারা আলাদা হয়ে পড়ে ।
ভাবলে অবাক লাগবে এই আধুনিক সমাজেও এই বর্ণ প্রথা বিলোপ সম্ভব হয় নি । এখনো অনেক জায়গায় পুকুর নলকূপ মন্দিরে বাউরিদের প্রবেশ বাঁধা দেওয়া হয় । ঈশ্বর বা ভগবান পৃথিবী সৃষ্টির সময় যে বিভেদ রচনা করেনি , মানুষ সেই মানুষের মাঝেই এভাবেই বিভেদ রচনা করে এসেছে যুগ যুগ ধরে ।
বাঙলার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাবো , এই বিভেদ ক্ষত আরও গভীর । এই অধ্যায়ে আমরা বাউরিদের ধর্ম , সংস্কৃতি , শিক্ষা প্রভৃতি নিয়ে আলোচনা করবো ।
উৎপত্তি
পশ্চিমবঙ্গের বাউড়ি জনসংখ্যা ১৮৭২ থেকে ১৯৭১
ওপরের ছক থেকে পরিষ্কার যে ১৯শতকের শেষ পর্যায় থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাউড়ি জনসংখ্যা কি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে । এ নিয়ে আলোচনা করবো , তবে তার আগে রাঢ় বাঙলার ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা যাক বাউড়ি দের ভূমিকা কতটা ।
বাউরিদের প্রধান অবস্থান রাঢ় অঞ্চলে । প্রধানত ঝাড়খন্ড ও পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া , বাঁকুড়া , বর্ধমান প্রভৃতি অঞ্চলে বাউড়ি দেখতে পাওয়া যায় । এই গোষ্ঠীর মানুষজন বাউড়ি পদবি হিসাবে ব্যবহার করা বেশি পছন্দ করে । এই আত্মভিমান ও নিজেদের বংশের প্রতি ভালোবাসা বাউরিদের মধ্যে পূর্ণ মাত্রায় লক্ষ করা যায় ।
বাউড়িদের উৎপত্তি নিয়ে নানা মুনির নানা মত লক্ষ করা যায় । এই বিষয়টি বাউড়িদের মধ্যেও সেভাবে সদুত্তর আমি পাই নি । তাই বিভিন্ন মতবাদ আপনাদের মাঝে তুলে ধরবো যার অনেকটা কাল্পনিক আর কিছুটা বাস্তব ।
বাউড়িদের সমাজে তাদের উৎপত্তি বিষয়ে লোকমুখে প্রচলিত কিছু পৌরাণিক কাহিনী আছে ; যা তারা তাদের উৎপত্তির মূল কারণ হিসেবে বিশ্বাস করে থাকে ।
প্রথম কাহিনী অনুসারে , স্বর্গের বাগান থেকে খাদ্য চুরির করার অপরাধে তাদের অভিশাপ প্রাপ্ত হয় এবং তার ফলে সমাজে পদচ্যুতি হয় তাদের । এ কাহিনী তাদের পুরপুরুষদের অর্থনৈতিক অবস্থারও একটি সুন্দর বর্ণনা তুলে ধরে ।
দ্বিতীয় কাহিনী অনুসারে , পৌরাণিক মতে বাউড়িদের গুরু ছিলেন বাহক ঋষি অথবা রিক মুনি । একদিন এক বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে বাউড়িরা তার পালকি বিক্রি করে , সেই অর্থ দিয়ে নেশা করে গুরুদেবের অপমান করে । তারই অভিশাপে তাদের সমাজে নিম্ন বর্ণ রূপে স্থান হয় ।
তৃতীয় কাহিনী অনুসারে , দেবী দুর্গার সিংহের অভিশাপে মায়ের শরীর থেকে স্নানাকালে নির্গত নোংরা যেখানে যেখানে জমে , সেখানে সেখানে এক প্রকার কালো মানুষ সৃষ্টি হয় । তারাই বাউড়ি ।
বাঁকুড়ার বাউড়িদের উৎপত্তি বিষয়ে এক লোক প্রচলিত কাহিনী পেশ করা হয়ে থাকে । বাঁকুড়ার ক্ষত্রিয়রা একুশ বার পরশুরামের ক্রোধ থেকে নিজেদের রক্ষা করার পর , সেখান থেকে পর্বত পাদদেশে জঙ্গলে পালিয়ে যায় । পরশুরাম যাতে তাদের চিনতে না পারে তাই তারা পাগল সেজে বাস করতে শুরু করে । পরশুরাম তাদের বাউড়া অর্থাৎ পাগল ভেবে ছেড়ে দেয় । তখন থেকে তারা বাউড়া নামে প্রসিদ্ধ হয়ে যায় , যা সময়ক্রমে লোকমুখে বাউড়ি বলে উচ্চারিত হতে থাকে ।
আবার অনেকের মতে পরশুরামের ভয়ে এই অঞ্চলের ক্ষত্রিয়রা জঙ্গলে পালিয়ে গিয়ে এক বাউড়ি মহারাজের আশ্রিত হয়ে বসবাস শুরু করে । তার মৃত্যুর সময় , তার কোন উত্তরাধিকারি না থাকায় তিনি এই ক্ষত্রিয়দের সব দায়িত্ব তুলে দেন এবং এরা ও এদের বংশধরেরা বাউড়ি হিসাবে প্রসিদ্ধ হয় ।
তবে , এই দ্বিতীয় কাহিনীটি আমার কাছে গ্রহণযোগ্য নয় , কারন জঙ্গলের সেই মহারাজ নিজে বাউড়ি ছিলেন । অর্থাৎ বাউড়ি বংশের উৎপত্তির ওপর এ কাহিনী সেভাবে আলোকপাত করে না ।
পৌরাণিক এই গল্পগুলো থেকে একটা কথা পরিষ্কার যে প্রত্যেকটি গল্প বাউরিদের সামাজিক অবনতির কথা তুলে ধরেছে । অবশ্য তার জন্য তাদের উৎশৃঙ্খল জীবনযাপন কেই বারবার দায়ী করা হয়েছে । কোন গল্পই তাদের সম্বন্ধে প্রশংসা সূচক কিছুই তুলে ধরে নি , যদিও একমাত্র ভালো কথা হলো যে তারা ক্ষত্রিয় ছিল ; এ কথা বলাই চলে ।
কাল্পনিক লোকমুখে প্রচলিত কিছু কাহিনী ছাড়াও বাউড়ি নিয়ে আরও কিছু আলোচনা তুলে ধরা যাক ।
১৮৯১ সালে রিসলে বিহার এবং পশ্চিম বঙ্গের ২০ জন বাউরিদের শারীরিক গঠন পরীক্ষা করে । তার লব্ধ সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে একটা কথা বলা যায় যে বাউড়ি সম্প্রদায়ের মানুষদের মাথা বেশ লম্বা , নাকের গঠন ছোট এবং চওড়া ; অনেকটা বাঁদরের নাকের মতো , শারীরিক উচ্চতা বেশ কম । এসবের ভিত্তিতে রিসলে বাউড়িদের হিন্দুকৃত দ্রাবিড়িয় সভ্যতার অন্তর্ভুক্ত করেন । ও ডোনেল-ও বাউড়িদের এই একই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্তের পক্ষে ছিলেন । অবশ্য ১৯৩১ পরবর্তী বর্তমান অনুসন্ধানের কারনে একটা কথা প্রায়শই উঠে এসেছে যে বাউরিরা বহিরাগত প্রটো এস্ট্রোলয়েড শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত । মানব বিজ্ঞানি হাটন এই বহিরাগত তত্বের পক্ষে নিজের মত প্রকাশ করেন । তিনি বাউড়িদের বাঙলা ও বিহারের বাভারিয়া ও বাওয়ারিয়া শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত একটি শ্রেণী হিসাবে গন্য করেন । মানব বিজ্ঞানী ক্রুক বাউড়িদের বাওয়ারিয়া শ্রেণীর মানুষ বলে উল্লেখ করেছিলেন । বাওয়ারিয়া হলো দ্রাবিড়িয় সভ্যতায় উত্তর ভারতে বসবাসকারী এক উপজাতি যাদের প্রধান কাজ ছিল লুন্ঠন ও শিকার ।
তবে , এই সমস্ত মানব বিজ্ঞানী ছাড়াও অনেকে বাউড়িদের উৎস বর্ণনা প্রসঙ্গে বাওরী দের উল্লেখ করেছেন , যারা ছিলেন একটি আর্য নিম্ন শ্রেণী । অনেকে বাউড়িদের বাগদীদের অংশজাত বলে বর্ণনা করেছেন , আবার অনেকে বাউড়িদের ভিল শ্রেণীর একটি বিভাগ বলে উল্লেখ করেছিলেন , যারা চুয়ার বিদ্রোহের পর চুয়ার উপজাতি হয়ে ভাগ হয়ে যায় । অনেকের মতে বাউড়ি হলো উড়িয়া গ্যাঞ্জাম প্রজাতির অংশ ।
এসমস্ত কিছু বিশ্লেষণ করলে একটা কথা বলাই যায় যে অধিকাংশ মতানুসারে বাউড়িরা চিরকাল পশ্চিমবঙ্গের অন্তর্ভুক্ত একটি শ্রেণী । হয়তো পশ্চিম কোন অঞ্চলে সৃষ্টি হলেও ধীরে ধীরে তারা পূর্ব দিকে সরে আসতে শুরু করে । সেই প্রসারণ কালে তারা বৌদ্ধ ধর্মের সংস্পর্শে এলে ধর্মান্তরিত হন এবং ধীরে ধীরে তাদের আদিবাসী তকমা বিলুপ্ত হয়ে যায় । হয়তো তাই অনেকে তাদের নিম্ন আর্য শ্রেণী অথবা বহিরাগত শ্রেণী হিসেবে ভুল করেছেন ।
আমার এ আলোচনা দেখে অনেকের মনে হতেই পারে যে কোন যুক্তিবলে আমি বাউড়িদের জন্মলগ্ন থেকে হিন্দু ধর্মের অন্তর্ভুক্ত করছি না বা হিন্দু না হলে বাউড়িদের আদি ধর্ম কি ছিল ? এসব তথ্য নিয়েই আলোচনা করবো এবার ।
ধর্ম থেকে চিরদিনই বঞ্চিত ছিল একথা ঠিক নয় । বাউরীদের সংস্কৃতি দেব দেবতা ছিল সন্যাসী,গ্রাম দেবতা,লৌকিক দেব দেবীর প্রাধান্য । গাছ ছিল তাদের প্রধান উপাস্য দেবতা । পরর্বতীকালে তারা হিন্দু ধর্মের সংস্পর্শে এসে এবং হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত হন ।
একটা কথা বলাই যায় হিন্দু ধর্মের কোন গ্রন্থেই বাউড়িদের উল্লেখ পাওয়া যায় না । আর পরশুরামের যে প্রচলিত গল্প আমরা বাউড়ি সমাজে শুনে থাকি সেখানেও তাদের ক্ষত্রিয় হিসাবে দেখানো হয়েছে । মনে রাখা উচিত বাউরিরা আদী কাল থেকে নিজেদের ক্ষত্রিয় বলেই দাবি করে থাকে । তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় হিন্দুদের সাথে অনেক মিল থাকলেও বাউড়িরা আদী ধর্মে হিন্দু ছিল না । পরিবর্তে একটা কথা লক্ষ করা যায় যে তাদের প্রাচীন তন্ত্রবাদ নামক নিজস্ব ধর্ম ছিল যা পরবর্তীতে বৌদ্ধদের দ্বারা আকৃষ্ঠ হয় এবং তার সাথে মিশে যায় ।
Comments
Post a Comment